বিল বাকি রাখলে মৃত রোগীর দেহ না ছাড়ার অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায় বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত বহু মামলায় কড়া মনোভাব দেখিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। এবার এ নিয়ে নয়া নিয়ম আনার কথা ভাবছে কমিশন। বিলের অজুহাতে মৃতদেহ আটকে রাখা হলেই সেক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: অপারেশনের পর ২১জন রোগীর শরীরে একই ধরনের সমস্যা, নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে তদন্ত
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমিশনের সচিব আরশাদ ওয়ারসি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মৃতদেহের ক্ষেত্রে কোনওরকম অজুহাত একেবারেই মেনে নেওয়া হবে না। উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই বাংলায় প্রোগেসিভ নার্সিংহোম অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্মেলনে রাজ্যের নার্সিংহোমগুলির পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্মেলনে অল ইন্ডিয়া নার্সিংহোম অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এইচ এম প্রসন্ন রাজ্যের নার্সিংহোমগুলিতে আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
এছাড়াও, বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমগুলির বিরুদ্ধে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করানোর অভিযোগও শোনা যায়। এ প্রসঙ্গে ওয়ারসি বলেন, রোগী ভর্তি হলেই কিছু কিছু জায়গায় প্রথম দিন থেকে একের পর এক টেস্ট করানো হয়। এমআরআই সিটি স্ক্যান থেকে শুরু করে অনেক কিছু টেস্ট করানো হয়। একদিনেই ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা বিল করা হয়। সেক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে অপ্রয়োজনীয় টেস্ট করা হচ্ছে রোগীদের। এটা একেবারে ঠিক নয়।
তবে নয়া নিয়মে বকেয়া বিল কীভাবে আদায় হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নার্সিংহোমগুলি। তাদের বক্তব্য, এতে রোগী-পরীজনদের হয়রানি কমলেও বিল আটকে থাকায় তাদের সমস্যায় পড়তে হবে। এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন বিচারপতি অসীমকুমার বন্দোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বকেয়া বিল যাতে মেটানো হয়, তার জন্য নতুন আইন তৈরি হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাওড়ার একটি নার্সিংহোমে এক রোগীকে দেড় মাস ধরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। বিল মেটাতে না পারায় সেই রোগী সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরেও আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নার্সিংহোমে রেখে দেওয়া হয় রোগীকে। পরে স্বাস্থ্য কমিশনের হস্তক্ষেপে রোগীকে ছেড়ে দেয় হাসপাতাল।