চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি বেলা শুনছো? বিখ্যাত এই গানের লাইনটা আজ বেশ হয়ে উঠেছে প্রাসঙ্গিক। কারণ চাকরিটা যে আজ নেই। পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তাই তখন চোখে নানা স্বপ্ন ছিল। সেসব এখন চুরমার হয়ে গিয়েছে যোগ্য–অযোগ্য কাউকে রেয়াত না করার জেরে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তবে সেখানে আশা বলতে যোগ্যরা স্কুলে যেতে পারবেন। আর বিনিময়ে বেতন পাবেন। কিন্তু প্রত্যেকেই নিজেকে যোগ্য মনে করেন। আর তাই সল্টলেকের স্কুল সার্ভিস কমিশনের অফিসের সামনে চলছে চাকরিহারাদের অবস্থান বিক্ষোভ আন্দোলন। তবে শুরুতে যে ঝাঁঝ ছিল সেটা এখন কমে এসেছে। ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডেরও বেশি গরমে এখন নাজেহাল দশা। তাই সংখ্যা এখন কমতে শুরু করেছে।
বুধবার ৪০ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা সহ্য করতে হয়েছে। গরমের মধ্যেই রাস্তায় বসে আছেন ওই চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষাকর্মীরা। এখানেই দেখা গেল, চাকরিহারা শিক্ষিকার বাবা এসে বসে আছেন। তিনি বৃদ্ধ। মেয়ে এদিন আসতে পারেনি। এখানে গরমের মধ্যে রাস্তায় বসে থেকে অসুস্থবোধ করেন তিনি। তাই তাঁকে অন্যরা জল দিচ্ছেন এবং হাওয়া করছেন। মেয়ে আসতে না পারায় তাঁর জায়গায় আন্দোলনে শরিক হয়েছেন তিনি। এই আবহে চাকরিহারাদের বক্তব্য, ‘কাকাবাবুকে বারবার বললাম, বাড়ি ফিরে যেতে। কিন্তু উনি গেলেন না।’
আরও পড়ুন: গুলি করে হত্যা সিআইএসএফ জওয়ানকে, আততায়ীরা ঝাঁঝরা করতেই আসানসোলে আলোড়ন
এখন শিক্ষা দফতর বেতনের নিশ্চয়তা জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। আবেদন করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পেয়েছে এসএসসি। তার মধ্যে যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা তুলে দেওয়া হচ্ছে। নতুন নিয়োগও হবে। যোগ্যরা এখন স্কুলে গিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন। এটাই সুপ্রিম কোর্টেরই নির্দেশিকা। সেটাই বলছে এখন এসএসসি। কিন্তু সেসব কথা শুনতে অনেকে রাজি নন। তাই এসএসসি অফিসের সামনে বসে চলছে আন্দোলন। শুরুতে এখানে ভিড় বেশ ছিল। আওয়াজও তোলা হচ্ছিল সপ্তগ্রামে। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় এক–তৃতীয়াংশে। কোন শিক্ষকের চাকরি আছে ও বেতন পাবেন, সেই চিঠি পৌঁছেছে শিক্ষা দফতর থেকে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে। তাতেই কি আন্দোলনের ঝাঁঝ কমল?
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বারবার বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী সবার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মেনে কাজ করছেন। সুতরাং অমূলক ভাবনা না ভেবে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হচ্ছে। ধৈর্য্য ধরতে বলা হচ্ছে। গরমে রাস্তায় বসে না থাকতে বলা হচ্ছে শিক্ষকদের। কারণ গরমে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন তাঁরা। এমন সময় কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় পর্যটকদের গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। এখন সংখ্যা কমতে শুরু করেছে আন্দোলনে। এই বিষয়ে চাকরিহারা শিক্ষকদের অন্যতম নেতা চিন্ময় বিশ্বাস বলেন, ‘প্রবল গরমে কেউ কেউ অসুস্থবোধ করছেন। তাই বাড়ি চলে গিয়েছেন। সকলেই আবার ফিরবেন। আন্দোলনের আগুন নেভেনি।’