মায়ের উদ্বেগ ছিল ছেলে বাউন্ডুলে বলে। সঙ্ঘের প্রচারক থেকে রাজনৈতিক উত্থান হলেও মায়ের ইচ্ছা ছিল, ছেলে যদি ভালবেসেও কাউকে বিয়ে করে তাতে তিনি রাজি। অন্তত সংসারি হোক। মায়ের সেই ইচ্ছা আজ পূরণ হতে চলেছে। ছেলে দিলীপ বিয়ে করতে চলেছেন রিঙ্কু দেবীকে। আজই জুড়ে যাবে দুই মন। রাজনীতির আঙিনা থেকে এবার দিলীপ ঘোষকে সংসার ধর্ম পালন করতে দেখা যাবে। তাঁর সহধর্মিণী হতে চলেছেন রিঙ্কু মজুমদার। ছেলের বিয়ের খবরে খুশি হয়েছেন মা পুষ্পলতা। কারণ আজ, শুক্রবার দিলীপ ঘোষের রাজারহাটের বাড়িতেই চার হাত এক হবে। হিন্দু রীতি মেনে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে মেদিনীপুরের প্রাক্তন সাংসদের বিয়ের পর্ব সম্পন্ন হবে। যা নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক নেতারাও।
এদিকে একদা দিলীপ ঘোষের জীবনটা ছিল, আজ কলকাতা, কাল মেদিনীপুর, আবার পরশু নয়াদিল্লি। এভাবে একটা জীবন চলে! সারাজীবন তাঁকে কে দেখবেন? আদরের ‘নাড়ু’কে নিয়ে এই চিন্তাই করতেন মা পুষ্পলতা। তবে আর চিন্তা করার কিছু নেই। ছেলের আজই মধুরেণ সমাপয়েৎ হতে চলেছে। প্রেমিকা রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে আইনি পথে বিয়ে সারছেন বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি। ভাবী পুত্রবধূকে খুব পছন্দ দিলীপের মায়ের বলে সূত্রের খবর। ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে পাত্রী রিঙ্কু মজুমদার বলেছেন, ‘আমরা নিজেরা নিজেদের অভিভাবক। নিজেদের সম্মতিতে সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছি।’
আরও পড়ুন: ‘দাঙ্গা তৈরি করা হয় ক্রিমিনালদের দিয়ে’, আবার অমিত শাহকে তুলোধনা করলেন মমতা
অন্যদিকে বিয়ের এই অনুষ্ঠানে থালি কি নিরামিষ? মেনুতে কী থাকছে? এইসব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, অতিথিদের জন্য আজ বিয়ের মেনুতে মাংস থাকছে না ঠিকই। তবে থাকবে নানা ধরণের মাছ এবং সবজির পদ। মাছের মাথা দিয়ে ডাল এবং ফিশফ্রাইও নাকি থাকবে। আবার নিরামিষ মুগের ডালও রাখা হচ্ছে। চিংড়ি, ভেটকি এবং কাতলা থাকছে গোপীবল্লভপুরের ‘নাড়ু’র বিয়েতে। সময় যত গড়াবে তত সামনে আসবে আর কি থাকছে। এই দিলীপ ঘোষই চল্লিশ বছর আগে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘে যোগ দিতে বাড়ি ছেড়েছিলেন। বাংলার নানা প্রান্তে সঙ্ঘের একাধিক দায়িত্ব সামলেছেন। ‘সঙ্ঘ প্রচারক’ তকমা মেলে। যার মূল শর্ত অবিবাহিত থাকা। প্রচারক হয়ে ছাদনাতলায় যাওয়া যায় না।
তবে আরএসএস তাঁকে বিজেপিতে পাঠিয়েছিল। সালটা ২০১৫। তখন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি হন। ২০১৬ সালে খড়্গপুর (সদর) কেন্দ্র থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হন। তারপর ২০১৯ সালে মেদিনীপুর থেকে সাংসদ হন। ‘গরুর দুধ থেকে সোনা’ খুঁজে পাওয়ার তত্ত্ব দিয়ে হাসির খোরাক হয়েছিলেন এই দিলীপ ঘোষই। তারপরও কুকথা, মহিলাদের প্রতি অসম্মানজনক কথা, অস্ত্র হাতে ধরার নিদান এসব করে বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন দিলীপ ঘোষ। অবশেষে ছাদনাতলায় আসছেন। কিছুদিন আগে থেকে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে রিঙ্কুদেবীর সঙ্গে দিলীপ ঘোষের। রিঙ্কু মজুমদার দক্ষিণ কলকাতা সাংগঠনিক জেলার মহিলা মোর্চার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে আছেন। এখন তাঁরা একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।