রাজনীতির লড়াই দুই তুতো ভাইয়ের সম্পর্কে চিড় ধরিয়েছিল। ক্রমে তা বড় ফাটলের আকার নেয়। আর, এবার সেই ফাটলই মেরামত করে জোড়া লাগার ইঙ্গিত পাওয়া গেল! ইঙ্গিত মিলল দুই ভাইয়ের তরফেই। এখানে যাঁদের নিয়ে কথা হচ্ছে, তাঁরা হলেন মহারাষ্ট্রের ঠাকরে পরিবারের বর্তমান দুই কর্তা - উদ্ধব ঠাকরে এবং তাঁর তুতো ভাই রাজ ঠাকরে।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে এই ঠাকরে কাজিনদের পথ আলাদা হয়ে গিয়েছিল। কারণ, রাজ শিবসেনা থেকে 'ভেন্ন' হয়ে নিজের আলাদা দল গড়েছিলেন। এখন শোনা যাচ্ছে, মারাঠিদের অস্তিত্ব ও সংস্কৃত রক্ষা করতে ফের একবার পরস্পরের হাত ধরতে পারেন উদ্ধব ও রাজ। আলাদা আলাদাভাবে দুই ভাই-ই তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
বর্তমানে উদ্ধব ও রাজ যথাক্রমে শিবসেনা (ইউবিটি) এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-এর প্রধান নেতা। তাঁরা দু'জনই বলেছেন, মহারাষ্ট্রের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক স্বার্থ রাজনীতির উর্ধ্বে।
একটি পডকাস্ট সাক্ষাৎকারে চলচ্চিত্র নির্মাতা মহেশ মঞ্জরেকর রাজ ঠাকরেকে প্রশ্ন করেন, তিনি কি তাঁর তুতো দাদার সঙ্গে সমস্ত বিরোধ মিটিয়ে ফের এক হতে রাজি আছেন? এর জবাবে কৌশলী বার্তা দেন রাজ। বলেন, তাঁর এবং তাঁর তুতো ভাইয়ের মধ্য়ে যে বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে আখেরে মহারাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
রাজ বলেন, 'উদ্ধব এবং আমার মধ্যে যে বিবাদ বা ঝগড়া রয়েছে, তা খুবই ছোট বিষয়। তার থেকে মহারাষ্ট্র অনেক বড় বিষয়। এই বিরোধ সামগ্রিকভাবে মহারাষ্ট্র এবং মারাঠীদের অস্তিত্ব সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে। একসঙ্গে ফেরাটা কঠিন কিছু নয়, এর জন্য শুধু একবার ইচ্ছা প্রকাশ করতে হবে। এটা শুধুমাত্র আমার ইচ্ছার কোনও বিষয় নয়। আমাদের বৃহত্তর পরিসরে সবটা দেখতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে থাকা মারাঠীদের একজোট হতে হবে এবং একটিই রাজনৈতিক দল গঠন করতে হবে।'
অন্যদিকে, ভাইয়ের সঙ্গে পুনর্মিলনে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন উদ্ধবও। ভারতীয় কামগর সেনার পক্ষ থেকে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে শর্তসাপেক্ষে সমঝোতার রাস্তা খোলার বার্তা দিয়েছেন উদ্ধব।
তিনি বলেন, 'আমি ছোটখাট বিরোধগুলি এক পাশে সরিয়ে রাখতে রাজি আছি। আমি সমস্ত মারাঠীদের আবেদন করছি, মহারাষ্ট্রের স্বার্থে সকলে একজোট হোন। কিন্তু, এক্ষেত্রে আমার শর্ত রয়েছে।...'
'যখন আমরা সংসদে দাঁড়িয়ে বলছি যে সমস্ত শিল্প গুজরাটে স্থানান্তরিত হয়ে যাচ্ছে, তারপর যদি আমরা একজোট হই, আমরা এমন একটি সরকার গঠন করতে পারি, যে সরকার মহারাষ্ট্রের স্বার্থে কাজ করবে। তখন কিন্তু আমরা এক পক্ষ থেকে অন্য পক্ষের দিকে যেতে পারব না। একদিন তাদের সমর্থন করলাম, পরের দিন তাদের বিরোধ করলাম, তারপর আবার আপস করে নিলাম!...'
'যাঁরাই মহারাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী কথা বলবেন, আমি তাঁদের স্বাগত জানাব না। তাঁদের বাড়িতে আমন্ত্রণ জানাব না। অথবা তাঁদের সঙ্গে একসাথে বসব না। আগে এটা স্পষ্ট করে নেওয়া দরকার। তারপর একত্রে মহারাষ্ট্রের জন্য কাজ শুরু করা যাবে।'