২ এপ্রিল ভারত-সহ একাধিক দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে দিনটিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘মুক্তি দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছেন তিনি। এরপরেই বিশ্বের একাধিক দেশের উপর শুল্কের যে খাঁড়া নেমে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একে একে পদক্ষেপ ঘোষণা করতে শুরু করেছে দেশগুলি। এর আগে চিন এবং কানাডা পাল্টা শুল্কের ঘোষণা করেছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপরে প্রায় ২২ বিলিয়ন ইউরো (২৩.২ বিলিয়ন ডলার) শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে।
বুধবার ইইউর ২৭টি সদস্য দেশের বেশিরভাগই মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের পক্ষে ভোট দিয়েছে। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি আরেকটি তালিকা প্রকাশ করা হবে। ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, তৃতীয় তালিকাটি চলতি বছরের শেষের দিকে ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। বেশিরভাগ পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ এবং কয়েকটি পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। জোটভুক্ত দেশগুলি ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের ‘প্রতিশোধ’ হিসেবে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে নতুন শুল্কের আওতায় থাকছে না যুক্তরাষ্ট্রের বোরবন হুইস্কি। ইউরোপের মদকে মার্কিন প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ থেকে বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যেসব পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছে ইইউ, সেগুলির মধ্যে রয়েছে বাদাম, কমলার রস, মুরগির মাংস, সয়াবিন, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম, তামাক এবং ইয়ট।
এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলেছে, 'ইইউ মার্কিন শুল্ককে অযৌক্তিক এবং ক্ষতিকারক বলে মনে করে, যা উভয়পক্ষের পাশাপাশি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ইইউ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের কথা জানিয়েছে, যা ভারসাম্যপূর্ণ এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী হবে।’ এই পদক্ষেপ ইউরোপের পক্ষ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রথম আনুষ্ঠানিক জবাব। ইইউ কমিশনের বাণিজ্য মুখপাত্র ওলোফ গিল এক্সে পোস্টে বলেন, ‘এই ব্যবস্থা যে কোন সময় স্থগিত করা যেতে পারে, যদি যুক্তরাষ্ট্র একটি ন্যায্য ও ভারসাম্যপূর্ণ সমঝোতায় সম্মত হয়।’ ইইউ জানিয়েছে, এই প্রতিক্রিয়া কেবল শুরু, এটি তাদের প্রথম দফার ব্যবস্থা। ট্রাম্প প্রশাসন শুধুমাত্র অ্যালুমিনিয়াম ও স্টিলেই নয়, ইইউ গাড়ির ওপরও ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং ইইউ থেকে সব ধরনের আমদানিতে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এর প্রভাব পড়েছে ইইউ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি হওয়া ৭০ পণ্যে। দ্বিতীয় দফার পাল্টা শুল্ক প্যাকেজ তৈরি করা হচ্ছে, যা আগামী সপ্তাহের শুরুতেই উপস্থাপন করা হবে।