মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদের নামে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় কয়েক হাজার মানুষ। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর হয়ে যায় যে দুষ্কৃতীদের ঠেকানো তো দূরের কথা, পুলিশকে নাকি মসজিদে গিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে হয়। এহেন পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসন বিএসএফের শরণাপন্ন হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যে। এই আবহে বিএসএফের তরফ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকে সাহায্য করতে বিএসএফ বাহিনী পাঠিয়েছে।
আরও পড়ুন: গোপন আলোচনা হয় রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর, মুর্শিদাবাদ হিংসার পর মুখ্যসচিব বলেন…
দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফ ডিআইজি জনসংযোগ আধিকারিক নিলোৎপাল কুমার পাণ্ডে বলেন, 'মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ সংশোঝনী বিলের প্রতিবাদে বিশাল জমায়েত হয়। পরবর্তীতে সেই জমায়েতকে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। জেলা প্রশাসন তখন বিএসএফের কাছে সাহায্যের আবেদন জানায়। বিএসএফ সেই আবেদনা সাড়া দিয়ে বাহিনী পাঠিয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে প্রশাসনকে সাহায্য করবে বাহিনী।'
এদিকে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে রাজ্য পুলিশ দাবি করেছে, বর্তমানে সুতি এবং সমশেরগঞ্জের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'সুতি ও জঙ্গিপুরের সামসেরগঞ্জের পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ বিশৃঙ্খল জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে সরিয়ে দিয়েছে। জাতীয় সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। যারা হিংসার ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা সমস্যা তৈরি করেছে তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে। যারা ভুল তথ্য দিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজবে কান দেবেন না, শান্ত থাকুন।'
উল্লেখ্য, ১১ এপ্রিলের ওয়াকফ হিংসায় একাধিক পুলিশ জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। একাধিক গাড়িতেও ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। হামলার মুখে প্রাণ বাঁচাতে স্থানীয় মসজিদে ঢুকে পড়েন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মী। উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ কার্যত ছিন্ন হয়ে যায়। ফরাক্কা-আজিমগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচলও থমকে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে থাকায় বিএসএফ-এর সাহায্য নেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের সামাল দিতে রাস্তায় নামেন বিএসএফ জওয়ানরা। কড়া হাতে অবস্থা আয়ত্তে আনার চেষ্টা করেন তাঁরা।