কীভাবে দেশজুড়ে চালানো হচ্ছে ডিজিট্যাল অ্যারেস্ট ও সেই সংক্রান্ত প্রতারণা চক্র? তা জানতে এবার কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া ডিজিট্য়াল অ্য়ারেস্ট চক্রের দুই মাথাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত চালাতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত দুই ব্যক্তি হলেন চিরাগ কাপুর ও যোগেশ দুয়া। ঘটনা প্রসঙ্গে জানা গিয়েছে, বিগত কিছু সময়ের মধ্যেই কলকাতা-সহ সারা রাজ্যে ডিজিট্যাল অ্যারেস্টের বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর শিকার হতে হয় প্রবীণ নাগরিকদের। যাঁরা তাঁদের সর্বস্ব খুইয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। এরই ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ প্রশাসন।
সেই তদন্তে উঠে আসে, এই ডিজিট্যাল অ্যারেস্টের একটি চক্র চালানো হচ্ছে দেশের রাজধানী দিল্লি থেকে। এবং সেই চক্র শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গে নয়, প্রতারণার ভার্চুয়াল জাল পেতে সারা ভারতেই বহু মানুষকে নিজেদের শিকার বানিয়েছে। হাতিয়ে নিয়েছে অন্তত ১৮০ কোটি টাকা! সব মিলিয়ে সারা দেশে প্রায় ৯৩০টি প্রতারণার ঘটনায় যুক্ত রয়েছে দিল্লির এই চক্র!
তদন্তে জানা যায়, দিল্লিতে রীতিমতো কর্পোরেট ধাঁচে অফিস খুলে এই কারবার চালাচ্ছেন দুই ভাই। তাঁরা হলেন - যোগেশ দুয়া এবং আদিত্য দুয়া। কলকাতা পুলিশ এই দু'জনের মধ্য়ে যোগেশ দুয়াকে গ্রেফতার করে। তারপর তাঁকে স্থানীয় আদালতে পেশ করে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতা নিয়ে আসে। সেইসঙ্গে আদিত্যা দুয়ার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়।
জানা যায়, এই দুই ভাই তাঁদের কর্পোরেট অফিসে যাঁদের নিয়োগ করতেন, তাঁরাই কখনও পুলিশ, কখনও সিবিআই বা আয়কর অফিসার সেজে বিভিন্ন মানুষকে ভিডিয়ো কল করে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করতেন।
কলকাতা পুলিশের সাইবার সেল যখন এই সংক্রান্ত ঘটনাগুলির তদন্ত করছিল, তখন একাধিক ঘটনার মোডাস অপারেন্ডির মধ্য়ে একাধিক মিল খুঁজে পায় তারা। তারই ভিত্তিতে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। যার জেরে গত জানুয়ারি মাসে (২০২৫) চিরাগ কাপুর নামে এক ব্যক্তিকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করে আনা হয়।
পরবর্তীতে, এই চিরাগকে জেরা করে বেঙ্গালুরু থেকেই ওঙ্কার সিং নামে আরও এক প্রতারককে গ্রেফতার করা হয় এবং তারও পরে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় যোগেশ দুয়াকে।
সংবাদমাধ্যমের হাতে আসা তথ্য বলছে, কলকাতা পুলিশের হাতে ধৃত যোগেশ আর চিরাগ দেশজুড়ে চলা ডিজিট্যাল অ্য়ারেস্টের ঘটনার তদন্তের ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারেন। সেই কারণেই এবার এই দু'জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চায় ইডি। এর জন্য আদালতে আবেদন করা হবে জানা গিয়েছে।