আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে নানা ঘটনার তদন্ত তাদেরকেই করতে হয়। তার সঙ্গে শিফটে শিফটে করতে হয় ডিউটিও। আর তার জেরে স্ট্রেস তৈরি হয় তাদের মধ্যে। এমনকী দীর্ঘ কাজের সূত্রে তৈরি হওয়া সাফল্য–ব্যর্থতার জেরে ডিপ্রেশন গড়ে ওঠে। এমন ঘটনা একাধিক দেখা গিয়েছে পুলিশকর্মীদের মধ্যে। এবার এই পরিস্থিতি থেকে পুলিশকর্মীদের মুক্ত করতে ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’ আয়োজন করল কলকাতা পুলিশ। এই ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’ করার মধ্যে দিয়ে চাপের মধ্যে থাকা পুলিশ ফোর্সের অফিসার ও কর্মীদের চাঙ্গা করা হবে। অনেক পুলিশকর্মীর আবার ডিপ্রেশনও হয়। তা থেকে নানা অঘটনও ঘটে। অবসাদে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা একাধিক রয়েছে পুলিশ মহলে। এই ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’ থেকে পুলিশকর্মীদের দেওয়া হয় মন্ত্র। যাতে বাড়তি চাপ কমাতে নিয়ম মেনে রোজ তাঁরা যোগব্যায়াম করেন। মেডিটেশনও করেন।
‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’ থেকে বলা হয়, পুলিশের কাজে চাপ থাকবেই। নানারকম ব্যস্ততা থাকবে। অনেক অপছন্দ মনে তৈরি হতে পারে। কিন্তু সেটা যেন কোনওভাবেই কাজে এবং শরীরে প্রভাব না ফেলে। কলকাতা পুলিশের পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’ অনুষ্ঠানে প্রায় ২৫০ জন পুলিশকর্মী এবং অফিসার উপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন এসিপি, জয়েন্ট কমিশনার পদের অফিসার–সহ অন্যান্য পুলিশ অফিসাররা। পুলিশের লাগাতার কাজের মধ্যে দিয়ে তৈরি হয় উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, স্ট্রেস এবং নানা মানসিক সমস্যা। তাতেই বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপ আর কমছে কর্মদক্ষতা। সব দিক ভেবেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভাঙড়ে তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগের অভিযোগ, কাঠগড়ায় আইএসএফ
অনেক পুলিশকর্মী আছেন যাঁরা এই স্ট্রেস বা মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হতে ঘুমের ওষুধ খান। এমন তথ্যও আছে পুলিশ মহলে। তাই সেসব বন্ধ করে রোজকার রুটিনে রাখতে বলা হচ্ছে মেডিটেশন, যোগ ব্যায়াম। এই ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’ করার প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে ছিলেন এসিপি হেডকোয়ার্টার্স অলোক স্যানাল। তিনি বলেন, ‘এই কাজ মেনে চললে পুলিশকর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অনেকটা উন্নতি হবে। আমরা জেনেছি, ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার পরে ঘরের কাজ করা প্রয়োজন। অফিস বা ডিউটি নিয়ে বাড়তি চিন্তা বাড়িতে বন্ধ করতে হবে।’
তাছাড়া ‘হ্যাপিনেস গ্যারান্টি প্রোগ্রাম’ থেকে বেশ কিছু উপকার হয়ে থাকে। এক, মাথা ঠান্ডা রেখে কাজ করা যায়। দুই, সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড় ওঠে। তিন, রোজকার জীবনে সুস্থতা আসে। চার, আনন্দের সঙ্গে কাজ করা যায়। আর তাই যোগব্যায়াম বিশেষজ্ঞ পাপিয়া ভরদ্বাজের বক্তব্য, ‘পুলিশের চাকরিতে নির্দিষ্ট সময় হয় না। তাই যখন তাঁরা সময় পাবেন তখন হাঁটা, যোগব্যায়াম করা দরকার। তার সঙ্গে প্রাণায়ম, ব্রিদিং এক্সারসাইজ–সহ কয়েকটি ব্যায়াম করলে উপকার হবে। এতে পজিটিভিটি তৈরি হয়।’