বছর দুয়ের আগেই অন্তরাত্মার কাছ থেকে ইঙ্গিত পেয়েছিলেন আইপিএলে বড়সড় কীর্তি গড়ার। অবশেষে রবিবার ইডেনে বাস্তবের রূপ পেল রিয়ান পরাগের সেই অন্তরাত্মার সংকেত। এমন এক অনবদ্য কীর্তি গড়েন রাজস্থান রয়্যালসের অস্থায়ী অধিনায়ক, যা আইপিএলে আর কোনও ক্রিকেটারের নেই।
২০২৩ সালের ১৪ মার্চ রিয়ান সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান যে, তাঁর অন্তরাত্মা বলছে, আইপিএলের কোনও একটা পর্যায়ে তিনি এক ওভারে ৪টি ছক্কা মারবেন। রবিবার ইডেনে কেকেআরের মইন আলির এক ওভারে শুধু চারটি নয়, বরং ৫টি বৈধ ডেলিভারিতে টানা পাঁচটি ছক্কা মারেন পরাগ।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, তিনি পরের ওভারে নিজের খেলা প্রথম বলে বরুণ চক্রবর্তীকেও ছক্কা হাঁকান। অর্থাৎ, তিনি ম্যাচে দুই ওভার মিলিয়ে নিজের খেলা টানা ৬টি বৈধ ডেলিভারিতে ৬টি ছক্কা মারার রেকর্ড গড়েন। যদিও এক ওভারের ৬টি বলে ছ'টি ছক্কা হাঁকানোর কৃতিত্ব থেকে অল্পের জন্য বঞ্চিত হন রাজস্থান তারকা।
আরও পড়ুন:- ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন বাংলার রিচা, হেরে ফাইনালের টিকিট এখনও অধরা হরমনপ্রীতদের
উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এক ওভারে না হোক, আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে টানা ৬টি বলে ৬টি ছক্কা হাঁকানোর নজির গড়েন রিয়ান পরাগ। আইপিএলে টানা পাঁচটি ছক্কা মারার নজির রয়েছে কেকেআরের রিঙ্কু সিংয়ের। তিনি ২০২৩ আইপিএলে আমদাবাদে গুজরাট টাইটানসের হয়ে মাঠে নামা যশ দয়ালের এক ওভারে টানা ৫টি ছক্কা হাঁকান।
রবিবার ইডেনে আইপিএল ২০২৫-এর ৫৩তম লিগ ম্যাচে কেকেআর শুরুতে ব্যাট করে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ২০৬ রান তোলে। পালটা ব্যাট করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালস একসময় ৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে। সেখান থেকে রাজস্থানকে লড়াইয়ে ফেরান রিয়ান পরাগ।
টানা ৬টি বৈধ বলে ৬টি ছক্কা রিয়ান পরাগের
ইনিংসের ১৩তম ওভারে মইন আলির প্রথম বলে ১ রান নেন শিমরন হেতমায়ের। ওভারের দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বলে পরপর চারটি ছয় মারেন রিয়ান। তার পরে একটি ওয়াইড বল করেন মইন। ব্রিটিশ তারকা পুনরায় ওভারের শেষ বল করলে ফের ছয় মারেন পরাগ।
ইনিংসের ১৪তম ওভারে বল করতে আসেন বরুণ চক্রবর্তী। তাঁর প্রথম বলে ১ রান নেন হেতমায়ের। দ্বিতীয় বলে রিয়ান পরাগ ছক্কা হাঁকান। অর্থাৎ, মইনের ওভারের ৫টি ও বরুণের ওভারের ১টি ছক্কা মিলিয়ে টানা ৬টি বলে ৬টি ছয় মারেন রিয়ান।
আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ১২তম ওভারে বৈভব আরোরার দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে পরপর ২টি চার মারেন রিয়ান এবং চতুর্থ বলে ১ রান নেন। অর্থাৎ, ১১.২ ওভার থেকে ১৩.২ ওভার পর্যন্ত রিয়ান যে ৯টি বল খেলেন, তাতে তিনি সংগ্রহ করেন (৪+৪+১+৬+৬+৬+৬+৬+৬) সাকুল্যে ৪৫ রান।
রিয়ান পরাগ ইডেনে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ২৭ বলে ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। তিনি শেষমেশ ৬টি চার ও ৮টি ছক্কার সাহায্যে ৪৫ বলে ৯৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। রাজস্থান রয়্যালস ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ২০৫ রান তোলে। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে ১ রানে জয় পায় কেকেআর।