রাজ্যে বর্তমান পরিস্থিতিতে সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা নিয়ে শহরের রাস্তায় হাঁটলেন শতাধিক মানুষ। মঙ্গলবার এই পদযাত্রায় সামিল হন বিশিষ্টজনেরা। তাতে ছিলেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি আইনজীবী, প্রাক্তন পুলিশকর্তা থেকে শুরু করে সমাজকর্মীরা। এদিন বিকেলে কলকাতার মৌলালি মোড় থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত পদযাত্রা করেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: ‘আমি মে মাসের শুরুতেই মুর্শিদাবাদ যাচ্ছি... ভরসা রাখুন!’ বললেন মমতা
এদিনের নিঃশব্দ এই পদযাত্রায় ছিলেন প্রাক্তন আইপিএস কল্যাণ মল্লিক, প্রাক্তন ডিএসপি অনিল কুমার রায়, ব্যারিস্টার সুব্রত চক্রবর্তি, সমাজকর্মী শতম মোদক, নিহারিকা মুখার্জি সহ আরও অনেকে।মিছিলের প্রথম সারিতে ছিলেন হিন্দু, মতুয়া, মুসলিম, খৃস্টান, বৈষ্ণব সহ বিভিন্ন ধর্ম ও জাতির মানুষ। এদিনের এই পদযাত্রার আহ্বান জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ লিগ্যাল সেলের চেয়ারম্যান মুকুল বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘নিঃশব্দ এই পদযাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন শতাধিক সাধারণ মানুষ। সন্ত্রাসের যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে মানায় না। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। কারও উস্কানিতে সাধারণ মানুষ যেন পা না দেয় সেটাই এদিন আমরা বার্তায় জানাতে চেয়েছি।’
মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে মুকুলবাবু আরও বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে চোখ, মুখ বন্ধ করে ঘরে বসে থাকলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। তাই এই সম্প্রীতির বার্তা বিশেষ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘যারা সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য উস্কানি দিচ্ছেন তাঁদের চিহ্নিত করুন। এরাই সমাজের মূল শত্রু।’
পদযাত্রায় যোগ দেওয়া ব্যারিস্টার সুব্রত চক্রবর্তি জানান, যা ঘটছে তা বাংলার ঐতিহ্য নয়। এই ঘটনা কাম্যও নয়। প্রাক্তন আইপিএস কল্যাণ মল্লিক বলেন, এই পরিস্থিতিতে কোনও সভ্য, সচেতন, শিক্ষিত ব্যক্তি চুপ করে বসে থাকতে পারে না। প্রাক্তন ডিএসপি অনিল কুমার রায় বলেন, সকলে মিলে মিশে থাকবে এটাই তো বাংলার মানুষ চান। যে কোনও মূল্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে। এদিনের এই পদযাত্রাকে শহরের মানুষ স্বাগত জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক বিষয় নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ঘটেছে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনাও। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় নামাতে হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও বিভিন্ন এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে। যদিও এই পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রীতি ও শান্তি রক্ষার বার্তা নিয়ে পথে নামতে দেখা যায়নি বুদ্ধিজীবীদের। সেই আবহে এই পদযাত্রা তাৎপর্যপূর্ণ।