কদিন আগেই মুর্শিদাবাদ জেলার নানা এলাকায় ব্যাপক হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। আর সেই হিংসার জেরে রাজ্য সরকার এবং শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নানা কথা উঠে গিয়েছিল। কিন্তু তারপর গঠন করা হয় ৯ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল। আর ফরেনসিকও বিশেষজ্ঞদের একটি টিম তৈরি করে। যাঁরা গতকাল শুক্রবার নমুনা সংগ্রহ এবং তদন্তে নেমেছিলেন। সেখানে তাঁরা যা পেলেন তা ঘুম উড়িয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট বলে মনে করা হচ্ছে। ওয়াকফ আন্দোলনকে সামনে রেখে সামশেরগঞ্জ, সূতি এবং ধুলিয়ানে বড় নাশকতা করার ছক কষা হয়েছিল। সিলিন্ডার বিস্ফোরণ করার ছক কষা হয়েছিল বলে তথ্য পেলেন তাঁরা এমনই সূত্রের খবর।
এদিকে মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ানের ডাকবাংলো মোড়ে এসে রাজ্য পুলিশের সিট এবং ফরেনসিক দল জোরদার কাজ শুরু করে। তখনই নানা তথ্য উঠে আসতে শুরু করে। মুর্শিদাবাদ জেলার ধুলিয়ানেই প্রথম অগ্নিসংযোগ করে অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল এবং তার জেরে ভস্মীভূত হয়ে যায় ক্যাফে। এদিন সেটা খুব ভাল করে পরিদর্শন করেন তদন্তকারীরা। ট্রাফিক গার্ডে করা হয় নমুনা সংগ্রহের কাজ। সেখানেই তথ্য উঠে আসে তদন্তকারীদের হাতে যে, বিস্ফোরণের মাত্রাকে বৃদ্ধি করতে মোট ২০০টি এলপিজি সিলিন্ডার জোগাড় করা হয়েছিল। এমনকী হ্যান্ড গ্রেনেডও মজুত করা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে এই তথ্য মিলেছে।
আরও পড়ুন: বৈশাখে ‘বসন্ত’ এল দিলীপের জীবনে! গোধূলি লগ্নে রিঙ্কুর সঙ্গে চার হাত এক হল
অন্যদিকে রেললাইনের পাথর, কাচের বোতলের সঙ্গেই প্রাণঘাতী বিস্ফোরক প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। আর তা করেছিল বহিরাগত আততায়ীরা। এরা ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় ঢুকেছিল অশান্তি ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। বাংলায় দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতেই এটা করা হয়েছিল বলে তথ্য পেয়েছে সিট। তাই এখন তাদের খোঁজে জোর তল্লাশি জারি আছে। হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি পরীক্ষা করে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের ঘুম উড়েছে। এত কম সময়ের মধ্যে একের পর এক গৃহস্থ বাড়ি যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে সেটাতে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। কারণ বিস্ফোরণের জেরেই কিছু বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। ফাটল ধরেছে ছাদেও। এমনকী কয়েকটি বাড়ির লোহার গ্রিল পর্যন্ত ঢালাই থেকে খুলে মাটিতে ঝুলছিল। বর্তমান পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে এই তথ্য মিলেছে।
ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, হ্যান্ড গ্রেনেড ছাড়া এসব ঘটানো সম্ভব নয়। আর তা বাংলাদেশি জঙ্গিদের তৈরি বলে তথ্য পেল সিট। ধুলিয়ানের এক এলপিজি ডিলারকে ভয় দেখিয়ে চমকে তাঁর গোডাউন থেকে সিলিন্ডার তুলে নেওয়া হয়েছিল নাশকতার জন্য। আর হ্যান্ড গ্রেনেড ওপার থেকে এসেছিল বলেই সিটের তদন্তকারীরা তথ্য পেয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাছাড়া বহিরাগতদের ওই দলে ঝাড়খণ্ডের পাকুড় এবং বিহারের কিষানগঞ্জের যুবকরা থাকার পাশাপাশি ছিল চোরাপথে সীমান্ত পার করে আসা বাংলাদেশি জঙ্গিরাও বলেও সিট সূত্রে খবর।