মীরাট হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি এবার উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়ায়। ভাইপোর সঙ্গে স্ত্রীকে পরকীয়ায় বাধা। যার জেরে দুবাই ফেরত স্বামীকে খুন করে দেহ দুই টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে জমিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। আর এই নৃশংস ঘটনায় ফের শিউরে উঠেছে গোটা উত্তরপ্রদেশ।
জানা গেছে, রবিবার সকালে পাটখাউলি গ্রামের কৃষক জিতেন্দ্র গিরি যখন জমিতে সন্দেহজনক আরেকটি ট্রলিব্যাগে পড়ে থাকতে দেখেন। এরপরেই তিনি তক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ট্রলিব্যাগটি খুললে, সকলের চোখ কপালে ওঠে। ট্রলিব্যাগের ভিতর থেকে প্লাস্টিকে মোড়ানো এক ব্যক্তির ধড় এবং বস্তায় মধ্যে পা দেখতে পায় পুলিশ।পাশাপাশি মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল। প্রথমে অনেক খোঁজ খবরের পরেও মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানতে পারে না পুলিশ। পরে বাদামী রঙের ট্রলিব্যাগটি তদন্তকারীদের সাফল্য এনে দেয়। ব্যাগটিতে একটি বিমানবন্দরের বারকোড লাগানো ছিল। এরপরেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ জানতে পারে মৃত ব্যক্তির নাম নওশাদ আহমেদ (৩৮)। তিনি মেল থানা এলাকার ভাতৌলি গ্রামের বাসিন্দা। ১০ দিন আগেই দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন-Ahmedabad: ইস্টার সানডে-তে ধর্মান্তরকরণ? প্রার্থনা সভায় বজরং দল-ভিএইচপির তাণ্ডব
এরপরেই পুলিশ নওশাদের বাড়িতে অভিযান চালায়। কিন্তু পুলিশের সামনে তাঁর স্ত্রী রাজিয়া কাঁদতে কাঁদতে জানান যে তার স্বামী নিখোঁজ হয়ে গেছেন। কিন্তু নওশাদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে রক্তের দাগ-সহ আরেকটি স্যুটকেস উদ্ধার হলে পুলিশের সন্দেহ হয় মৃতের স্ত্রীর উপর। এরপরেই নওশাদের স্ত্রীকে আটক করে জোরদার জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। অবশেষে পুলিশি জেরায় রাজিয়া জানায়, সে এবং তার প্রেমিক রুমান, সম্পর্কে ভাইপো হয়, একসঙ্গে মিলে নওশাদকে খুনের ষড়যন্ত্র করেছিল। কারণ নওশাদ তাদের সম্পর্কের মধ্যে হস্তক্ষেপ করছিল। তবে রাজিয়াকে গ্রেফতার করা হলেও রুমানকে এখনও পর্যন্ত ধরতে পারেনি পুলিশ। তাকে পাকড়াও করতে ইতিমধ্যে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। অন্যদিকে, মৃতদেহটি যে জমিতে পাওয়া গেছে সেখানে ডগ স্কোয়াড এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-Ahmedabad: ইস্টার সানডে-তে ধর্মান্তরকরণ? প্রার্থনা সভায় বজরং দল-ভিএইচপির তাণ্ডব
নওশাদের বাবা মান্নু আহমেদ বলেন, তিনি কখনই ভাবতে পারেননি ছেলের এমন করুণ পরিণতি হবে। তাঁর কথায়, 'আমার ছেলে অত্যন্ত ভদ্র মানুষ ছিল। এক বছর আগে স্ত্রীর সম্পর্কের কথা জানার পরও সে তাকে ক্ষমা করে দিয়েছিল। কিন্তু এখন সে আমাদের পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তার মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত। নওশাদ ও রাজিয়ার ছয় বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এক বছর আগে, যখন নওশাদ দুবাই থেকে ফিরে আসেন, তখন ভাইপোর সঙ্গে স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জানতে পারেন।এই বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত হস্তক্ষেপ করলে রাজিয়া রুমানের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না বলে কথাও দেয়। কিন্তু নওশাদ দুবাই ফিরে যেতেই ফের একই কাজ করতে থাকে রাজিয়া।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মীরাটে প্রেমিকের সঙ্গে মিলে মুসকান তার স্বামীকে খুন করেছিল। খুনের পরে মার্চেন্ট নেভি অফিসারের দেহ টুকরো টুকরো করে সিমেন্ট দিয়ে ড্রামে আটকে দেওয়ার এক মাস পর একই রাজ্যে এই হত্যার ঘটনা সামনে এসেছে।