শরিকি জমি নিয়ে বিবাদ। সেই জমির মাটি বিক্রিকে কেন্দ্র করে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার থানার বড়গোদা গ্রামে। লাঠিপেটা করা হল দুই মহিলাকে। শুধু তাই নয়, আহত অবস্থাতেই তাঁদের মধ্যে একজনের জিভ কেটে দেওয়া হল কাঁচি দিয়ে। ঘটনায় দুই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি হলেন একজন বিজেপি নেতা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।
আরও পড়ুন: যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন, রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে তদন্তে পুলিশ
জানা গিয়েছে, মৃত দুই মহিলার নাম মিনুরানি দাস (৫২) এবং সুপ্রিয়া দাস (২৪)। তাঁরা সম্পর্কে শাশুড়ি ও বউমা। এরমধ্যে মিনুদেবীর জিভ কাঁচি দিয়ে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও, মিনুরানির স্বামী গুরুপদ দাস ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন। তিনি তমলুক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। জানা গিয়েছে, শরিকি জমির মাটি বিক্রি করাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনার সূত্রপাত।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গুরুপদ বাবুরা মোট ছয় ভাই। তার মধ্যে এক ভাই আগেই মারা গিয়েছেন। অন্য এক ভাই আলাদা এলাকায় থাকেন। বাকি চার ভাই এক জায়গাতেই থাকেন। ওই গ্রামের কংসাবতী নদী সংলগ্ন এলাকায় গুরুপদর বাড়ি। অভিযোগ উঠেছে, গুরুপদ বাবুর দুই ভাই সুভাষ ও কিশোরীমোহন ওই জমির মাটি স্থানীয় একজনকে বিক্রি করেন। জেসিবি দিয়ে মাটি কেটে মোটরভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তা দেখতেই আপত্তি জানান গুরুপদ বাবু, তাঁর স্ত্রী এবং বৌমা। তখন দুপক্ষ বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এরপর গুরুপদবাবু সন্ধ্যা নাগাদ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুপ্রিয়া মণ্ডলের কাছে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি পঞ্চায়েত প্রধানের কাছেও অভিযোগ জানান। কিন্তু, রাতে বাড়ি ফিরতেই ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া শুরু হয়। অভিযুক্ত দুই ভাই গুরুপদর বউমার উপর হামলা চালায়। তাকে বাঁচাতে গুরুপদবাবু এবং মিনুদেবী আটকাতে যান। তখনই অভিযুক্ত দুই ভাই তাঁদের উপরেও লাঠি, লোহার রোড দিয়ে হামলা চালায়। আরও অভিযোগ, মিনুদেবী আহত হওয়ার পর হামলাকারীরা কাঁচি দিয়ে তাঁর জিভ কেটে দেয়।
তিনজনকেই আহত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দুজনের মৃত্যু হয়। আহত অবস্থায় এখনও চিকিৎসা চলছে গুরুপদবাবুর। ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তথা গুরুপদ বাবুর ভাই সুভাষ হলেন গ্রামের বিজেপি নেতা। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।